Monday, January 10, 2022

যে ব্যক্তি ভালো কাজের পরিকল্পনা করলো, কিন্তু বাস্তবে সে ঐ কাজ করতে পারলো না,  তবুও সে ব্যক্তির জন্য সওয়াব লেখা হবে

যে ব্যক্তি ভালো কাজের পরিকল্পনা করলো, কিন্তু বাস্তবে সে ঐ কাজ করতে পারলো না, তবুও সে ব্যক্তির জন্য সওয়াব লেখা হবে

 "যে ব্যক্তি ভালো কাজের পরিকল্পনা করলো,

কিন্তু বাস্তবে সে ঐ কাজ করতে পারলো না, 

তবুও সে ব্যক্তির জন্য সওয়াব লেখা হবে।"

    [ সহীহ_মুসলিম, ৩৫৪ নং হাদিস ]

কুরান তিলাওয়াত করুন এবং তেলাওয়াত শুনুন এতে সুখ - শান্তি ও প্রশান্তি পাবেন

কুরান তিলাওয়াত করুন এবং তেলাওয়াত শুনুন এতে সুখ - শান্তি ও প্রশান্তি পাবেন

কুরআন তিলাওয়াত করুন এবং তেলাওয়াত শুনুন। এতে সুখ-শান্তি ও প্রশান্তি পাবেন। কুরআন তেলাওয়াতের ক্যাসেট শুনার জন্য আপনি প্রতিদিন কয়েক মিনিট বরাদ্দ করতে পারেন। আপনি রাস্তা-ঘাটে, কর্মস্থলে বা অফিসে যে শব্দ শুনেন তা অবশ্যই আপনার বিরক্তি উৎপাদন করে, তাই আপনার প্রভুর কিতাব (পুস্তক) পাঠ করে নিজেকে শান্তি দেয়ার জন্য কিছু সময় বের করুন। ◉ “যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের অন্তর আল্লাহর জিকিরে প্রশান্ত হয়। জেনে রাখ! আল্লাহর জিকিরে অন্তর প্রশান্ত হয়।” (সূরা রাআদ:২৮) ◉ একটি সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে— “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনে মাসউদ (রাঃ)-কে কুরআনের সূরা নিসা পড়তে আদেশ করলেন। তিনি পড়তে থাকলেন আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চোখের পানি (তার) গাল বেয়ে পড়তে লাগল। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যথেষ্ট হয়েছে (এখন তুমি থামতে পার)”। [সহীহ্ মুসলিম:৮০০] ◉ “(হে মুহাম্মদ!) আপনি বলে দিন, যদি মানুষেরা ও জীনেরা এই কুরআনের মতো কোন কিছু সৃষ্টি করার জন্য একত্রিত হয় তবুও তারা এর মতো কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা একে অপরের সাহায্যকারী হয়।” (সূরা বনী ইসরাঈল:৮৮) ◉ “যদি আমি এ কুরআনকে পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি অবশ্যই পাহাড়কে আল্লাহর ভয়ে বিনীত ও বিদীর্ণ হয়ে যেতে দেখতে পেতে।” (সূরা আল হাশর:২১) দৈনন্দিন জীবনের কার্যতালিকা মাঝে মাঝে উদাসীন করে তোলে, তাতে খাওয়া আর ঘুম ছাড়া কোন কিছুর প্রতি যত্ন নেয়া হয় না; এভাবে জানোয়ারের পর্যায়ে নেমে যেতে হয়। কিন্তু যখন কেউ তার প্রভুর বাণীর দিকে ফিরে আসে তখন সে আরাম ও শান্তি বোধ করে। আসুন আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের রুটিন পরিবর্তন করি। প্রতিদিন কিছুটা করে হলেও কুরআন তিলাওয়াত করি, শুনি। অন্তত একটি সূরা, তা সম্ভব না হলে অন্তত কিছু আয়াত। আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করার এবং শোনার তাওফিক দিন। আল্লাহুম্মা আমিন 🤲🤲
নির্বাচিত ৪ টি আমল যার প্রত্যেকটির বিনিময়ে জান্নাতে ঘড় পাবেন

নির্বাচিত ৪ টি আমল যার প্রত্যেকটির বিনিময়ে জান্নাতে ঘড় পাবেন

🕋 নির্বাচিত ৪টি আমল যার প্রত্যেকটির বিনিময়ে জান্নাতে ঘর পাবেন ১// আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি কাতারের ফাঁকা জায়গা বন্ধ করে, এর মাধ্যমে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন এবং তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করেন। 🌴তাবারানি আসওয়াত--৫৯৫৯(শব্দাবলী তার), 🌿মাজমাউয যাওয়ায়িদ হা/২৫০২, 🍁সহীহ আত তারগীব হা/৫০২, ☑️তাহক্বীকঃশায়ক আলবানী হাদীসটি কে সহীহ্ লিগাইরিহি বলেছেন।। ২// উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি দিবা-রাত্রে বার রাকআত (সুন্নাত মুওয়াক্কাদার) সালাত আদায় করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানানো হবে। 🍁সুনানে আন-নাসায়ী--১৮০৪ ☑️হাদিসের মান: সহিহ হাদিস। ৩//মুআয বিন আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি ‘ক্বুল হুঅল্লা-হু আহাদ’ শেষ পর্যন্ত ১০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতে এক মহল নির্মাণ করবেন।” এ কথা শুনে উমার বিন খাত্ত্বাব (রাঃ) বললেন, ‘তাহলে আমরা বেশি বেশি করে পড়ব হে আল্লাহর রসূল!’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, “আল্লাহও বেশি দানশীল ও বেশি পবিত্র।” (আহমাদ ১৫৬১০, প্রমুখ, সিলসিলাহ সহীহাহ ৫৮৯) 🌴হাদিস সম্ভার-১৪৪৮ ☑️হাদিসের মান: সহিহ হাদিস। ৪// আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দু'রাকআত যুহার সালাত আদায় করবে, তাকে গাফেল লোকদের মধ্যে গণ্য করা হবে না। আর যে ব্যক্তি চার রাকআত আদায় করবে, তাকে আবেদ (ইবাদত গুজারীদের অন্যতম) গণ্য করা হবে। আর যে ব্যক্তি ছয় রাক'আত সালাত আদায় করবে, তা তার ঐ দিনের জন্য যথেষ্ট হবে। আর যে ব্যক্তি আট রাক'আত আদায় করবে, আল্লাহ তাকে অনুগত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করবেন। আর যে ব্যক্তি বারো রাক'আত সালাত আদায় করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন। 🌴সহীহ আত তারগীব--৬৭১ ও ৬৭২। 🌿মাজমাউয যাওয়ায়িদ গ্রন্থে--৩৪১৯ ☑️মানঃ হাসান হাদিস। 🌍 কপি ও শেয়ার করুনঃ 🍁 রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হতে সামান্য ঘাটতি হবে না---🌴মুসলিম-৬৬৯৭ (সহীহ)
যাদের রাতে ঘুমাতে দেরি হয় তাদের জন্ন

যাদের রাতে ঘুমাতে দেরি হয় তাদের জন্ন

যাদের রাতে ঘুমাতে দেরি হয়, তাদের জন্য"‼️💞 এক ব্যক্তি হযরত ইব্রাহিম ইবনে আদহাম (রহঃ) এর সাথে তর্ক করছিলো যে- 'বরকত' বলতে কিছুই নেই। তিনি বললেন, তুমি কি ছাগল ও কুকুর দেখেছো? লোকটি বলল, জি দেখেছি। শায়খ লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন- বলতো কুকুর আর ছাগল এর মধ্যে কে বেশি বাচ্চা দেয়? লোকটি বললো, কুকুর। শায়খ বললেন, এদের মধ্যে তুমি কোন জন্তুটিকে বেশি দেখতে পাও, কুকুর না ছাগল? লোকটি বললো, ছাগল। শায়খ ইব্রাহিম ইবনে আদহাম (রহঃ) বললেন, "ছাগলকে জবেহ করা হয়, এরপর ও ছাগলের সংখ্যায় বেশি দেখা যায়, কমে না। এটা কি বরকত নয়? লোকটি বললো, এর কারণ কি- ছাগলের মধ্যে বরকত হয়, আর কুকুরের মধ্যে বরকত হয় না? শায়খ বললেন, ছাগল সন্ধ্যা হতেই ঘুমিয়ে যায়, আর ভোরে জাগ্রত হয়, এই সময়টাই হয় রহমত ও বরকত বর্ষণের মুহূর্ত। ফলে তার মধ্যে বরকত হয়। আর কুকুর সারা রাত জাগ্রত থাকে ফজরের আগে ঘুমায়। তাই সে বরকত থেকে বঞ্চিত থাকে। একটু_চিন্তার_বিষয়, নবীজি (সঃ) এর সুন্নাত হলো- এশার নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে যাওয়া। শেষ রাতে জাগ্রত হয়ে তাহাজ্জুদ পড়া, কেননা আল্লাহ রাতের শেষ তৃতীয়াংশে প্রথম আসমানে নেমে এসে বান্দাদের কে দোয়া করার জন্য ক্ষমা চাওয়ার জন্য ডাকতে থাকেন। আর আমরা? সাড়া রাত মোবাইলে, ইন্টারনেটে হারাম কাজে ব্যস্ত থেকে ঠিক এই সময়ে ঘুমিয়ে পড়ি। আর ফজরের তো খবরই নেই। অথচ রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেন, ফজরের কেবল দুই রাকাত সুন্নাত সালাত পৃথিবী এবং এর মধ্যে যা আছে সবকিছুর চাইতে উত্তম, সুবহানআল্লাহ। তাহলে দুই রাকাত ফরজের কতটা মর্যাদা হতে পারে? এমন অতি মূল্যবান সময় আমরা ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেই। তাহলে আমাদের কাজ কর্মে আল্লাহ বরকত দিবেন কিভাবে? আবার আমরাই দোয়া করে অস্থির হয়ে যাই আর ভাবি - আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করেন না কেনো? তাই আসুন আমরা এখনই নিজেকে পরিবর্তন করি, আল্লাহর বিধান সমূহকে যথাযথভাবে গুরুত্বের সাথে পালন করি। তাহলে আশা করা যায়, তিনি আমাদের দোয়া কবুল করবেন এবং কাজকর্মে বরকত দিবেন, ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুন, আল্লাহুম্মা আমিন। collected
দু আ কবুলের গল্প

দু আ কবুলের গল্প

দু'আ কবুলের গল্প♥ আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার এবং একটি দোয়া কবুলের গল্প। দোয়া জীবন পরিবর্তন করতে পারে। বিশেষ করে বোনেরা বিয়ের আগে কেমন জীবনসঙ্গী চান সেটা সবার আগে আল্লাহকে বলুন। খুব বাজে একটা দাম্পত্য সম্পর্কের (মা-বাবার) পরিবার থেকে বিলং করি আমি। ছোট থেকে খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে পরিবার নিয়ে। বিয়ে জিনিসটা খুব অসহ্য লাগতো একসময়। দ্বীনের বুঝ পাওয়ার পর ডিসিশন নেই বিয়ে করব। বেশ কিছু বায়ো ডাটা পাই। তার মধ্যে একজনের সাথে কথা বেশ অনেকটুকু আগায়। খুব ভয় করছিলো। তার আখলাক ভাল, দেশের নামকরা প্রতিষ্ঠানে পড়েন। সব দিক থেকেই ভাল। আমার নিজের সম্পর্কে বিশেষ কিছু ব্যক্ত করে বলার মতো তেমন কিছু নেই। প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে দিন যেতো। যদি কষ্ট পাই? বিয়ের পরের স্মৃতিচারণ যদি তিক্ত হয়! আল্লাহর কাছে খুব দোয়া করেছি, খুব কান্না করেছি। মাসের পর মাস রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়েছি। শত-শত বার ইস্তেগফার করেছি। রোজা রেখেছি। অনেক ঝড়-ঝাপটা মাড়িয়ে অবশেষে অর্ধ বছর লম্বা সময় অপেক্ষা করে সপ্তাহের পবিত্র দিনে জুমা’র পরে আমাদের বিয়ে হয়। এর পরের জীবনটা আমার অবর্ণনীয়। আল্লাহ আমাকে এমন নিয়ামত দিয়েছেন যে সত্যি বলতে মাঝে মাঝে মনে হয় আমি এতটাও উপযুক্ত নই এসবের। আল্লাহ আমাকে এমন একজন জীবন সঙ্গী দিয়েছেন যার তুলনা আমি কোথাও খুঁজে পাই না। চক্ষুশীতলকারী অন্তর শীতলকারী একজন। আমার প্রতিটি কাজ মুগ্ধ হয়ে এপ্রিশিয়েট করেন। রান্নাটা খারাপ হলেও পেটপুরে খেয়েদেয়ে ওঠে যান। অফিস থেকে ফিরে সুন্দর সুন্দর নাম ধরে ডাক দেন। মাঝে মাঝে কবিতা শুনান। মন খারাপ হলে গল্প শোনান। দিনের কিছু সময় এটা ওটা বলে খুব হাসান। মাঝে মাঝে বলি, "আমি কি একটু রেগেও থাকতে পারবো না?" - নাহ, বউরা রাগ করলে বাসায় ভালো লাগে নাকি! এই ভালবাসা গুলো কি হারামে ডুবন্ত গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ডরা অনুভব করতে পারবে? আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। আমি দুনিয়াতে এক টুকরো জান্নাত হিসেবে আমার সংসারটাকে পেয়েছি। প্রত্যেক দিন মনে হয় যে, আমি নতুন করে তার প্রেমে পড়ি। সত্যি বলতে আমি দুনিয়াতে টাকা পয়সা নাম ডাক কিছু চাই না। শুধু চাই যখন মৃত্যু আসবে এই মানুষটার দিকে তাকিয়ে থেকে কালেমা পড়ে যাতে আমি দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারি। [এমন নয় যে আমাদের ঝগড়া হয় না কিংবা কোনো কষ্ট নেই জীবনে। আমি শুধু ভালোটুকু বেঁছে নিয়েছি জীবনে ভাল থাকার জন্য] - নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বোন
একটি অনাকাংক্ষিত ভুল এবং ক্ষমা

একটি অনাকাংক্ষিত ভুল এবং ক্ষমা

#একটি_অনাকাংক্ষিত_ভুল_এবং_ক্ষমা একদিন মদীনার দুই ব্যক্তি একজন যুবককে টেনে-হিঁছড়ে, অর্ধপৃথিবীর শাসক খলীফা হযরত উমর (রা) এর দরবারে হাজির করল। এবং তারা বিচার দাখিল করল যে, "এই যুবক আমাদের পিতাকে হত্যা করেছে। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।" . আমিরুল মু’মিনীন খলীফা হযরত উমর (রা) সেই যুবককে তার বিপক্ষে করা দাবী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। সেই যুবক বললেন, "তাদের দাবী সম্পুর্ণ সত্য।" এই বলে যুবকটি তাঁর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘঠনাটি বর্ণনা করতে লাগলেন। . তিনি বললেন, "আমি ক্লান্ত হয়ে যাবার কারণে বিশ্রামের জন্য এক খেজুর গাছের ছায়ায় বসলাম। ক্লান্ত শরীরে অল্প সময়েই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার একমাত্র পছন্দের বাহন উটটি পাশে নেই। খুঁজতে খুঁজতে কিছু দূর গিয়ে পেলাম, তবে তা ছিল মৃত। পাশেই ছিল ওদের বাবা। যে আমার উটকে তার বাগানে প্রবেশের অপরাধে পাথর মেরে হত্যা করেছে। এই কারণে আমি হঠাৎ করে রাগান্বিত হয়ে পড়ি এবং তাদের বাবার সাথে তর্কাতর্কি করতে করতে এক পর্যায়ে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে ফেলি, ফলে সে সেইখানেই মারা যায়। যা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটে গেছে। এর জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।" . বাদী’রা জানালেন- "আমরা এর মৃত্যুদণ্ড চাই।" হযরত উমর (রা) সব শুনে বললেন, "উট হত্যার বদলে তুমি একটা উট নিলেই হতো, কিন্তু তুমি বৃদ্ধকে হত্যা করেছ। হত্যার বদলে হত্যা। এখন তোমাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে। তোমার কোন শেষ ইচ্ছা থাকলে বলতে পারো।" নওজোয়ান বললো, "আমার কাছে কিছু ঋণ ও অন্যের রাখা কিছু আমানত আছে। আমাকে যদি কিছু দিন সময় দিতেন তবে আমি বাড়ি গিয়ে আমানত ও ঋণগুলি পরিশোধ করে আসতাম।" . খলিফা হযরত উমর (রা) বললেন, "তোমাকে এভাবে একা ছেড়ে দিতে পারি না। যদি তোমার পক্ষ থেকে কাউকে জিম্মাদার রেখে যেতে পারো তবে তোমায় সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দিতে পারি। "নওজোয়ান বললো, "এখানে আমার কেউ নেই। যে আমার জিম্মাদার হবে। এখন আমি কি করি।" যুবকটি তখন নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। . এই সময় হঠাৎ মজলিসে উপস্থিত এক সাহাবী যার নাম হযরত আবু যর গিফারী (রা), দাঁড়িয়ে বললেন, "আমি হবো ঐ ব্যক্তির জামিনদার।" সাহাবী হযরত আবু যর গিফারীর (রা) এই উত্তরে সভায় উপস্থিত সবাই হতবাক। একেতো অপরিচিত ব্যক্তি তার উপর হত্যার দন্ড প্রাপ্ত আসামীর জামিনদার। খলিফা বললেন, "আগামি শুক্রবার জুম্মা পর্যন্ত নওজোয়ানকে মুক্তি দেয়া হলো। জুম্মার আগে নওজোয়ান মদীনায় না আসলে নওজোয়ানের বদলে আবু যরকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে।" মুক্তি পেয়ে নওজোয়ান ছুটলো মাইলের পর মাইল দূরে তার বাড়ির দিকে। আবু যর গিফারী (রা) চলে গেলেন নিজ বাড়িতে। . দেখতে দেখতে জুম্মাবার এসে গেল। নওজোয়ানের আসার কোনো খবর নেই। হযরত উমর (রা) রাষ্ট্রীয় পত্রবাহক পাঠিয়ে দিলেন আবু যর গিফারির (রা) কাছে। পত্রে লিখা আজ শুক্রবার বাদ জুমা সেই যুবক যদি না আসে আইন মোতাবেক আবু যর গিফারির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হবে। আবু যর যেন সময় মত জুম্মার প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে নববীতে হাজির হন। খবর শুনে সারা মদীনায় থমথমে অবস্থা। একজন নিষ্পাপ সাহাবী আবু যর গিফারী আজ বিনা দোষে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবেন। জুমার পর মদীনার সবাই মসজিদে নববীর সামনে হাজির। সবার চোখে পানি। কারণ দন্ডপ্রাপ্ত যুবক এখনো ফিরে আসেনি। জল্লাদ প্রস্তুত। . জীবনে কত জনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছে তার হিসেব নেই। কিন্তু আজ কিছুতেই চোখের পানি আটকাতে পারছে না জল্লাদ। আবু যরের মত একজন সাহাবী সম্পূর্ণ বিনা দোষে আজ মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবেন, এটা মদীনার কেউ মেনে নিতে পারছেন না। এমনকি মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদানকারী খলিফা উমর (রা) নিজেও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। হৃদয় তাঁর ভারাক্রান্ত। তবু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কারো পরিবর্তনের হাত নেই। আবু যর (রা) তখনও নিশ্চিন্ত মনে হাঁসি মুখে দাঁড়িয়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত। জল্লাদ ধীর পায়ে আবু যর (রা) এর দিকে এগুচ্ছেন আর কাঁদছেন। আজ যেন জল্লাদের পা চলে না। পায়ে যেন কেউ পাথর বেঁধে রেখেছে। . এমন সময় এক সাহাবী উচ্চ স্বরে জল্লাদকে বলে উঠলেন, "হে জল্লাদ একটু থামো। মরুভুমির ধুলার ঝড় উঠিয়ে ঐ দেখ কে যেন আসতেছে। হতে পারে ঐটা নওজোয়ানের ঘোড়ার পদধুলি। একটু দেখে নাও, তারপর না হয় আবু যরের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করো।" ঘোড়াটি কাছে আসলে দেখা যায় সত্যিই এ সেই নওজোয়ান। . নওজোয়ান দ্রুত খলিফার সামনে এসে বললো, "হুযুর বেয়াদবি মাফ করবেন। রাস্তায় যদি ঘোড়ার পায়ে ব্যথা না পেত,তবে যথা সময়েই আসতে পারতাম। বাড়িতে গিয়ে আমি একটুও দেরি করি নাই। বাড়ি পৌঁছে গচ্ছিত আমানত ও ঋণ পরিশোধ করি। তারপর বাবা, মা এবং নববধুর কাছে সব খুলে বলে চিরবিদায় নিয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে মদীনার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। এখন আমার জামিনদার ভাইকে ছেড়ে দিন আর আমাকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে পবিত্র করুন। কেননা কেয়ামতের দিন আমি খুনি হিসেবে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে চাই না।" . আশেপাশের সবাই একেবারেই নীরব। চারিদিকে একদম থমথমে অবস্থা। সবাই হতবাক, কি হতে চলেছে। যুবকের পুনরায় ফিরে আসাটা অবাক করে দিলো সবাইকে। . খলিফা হযরত উমর (রা) যুবককে বললেন, "তুমি জানো তোমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে, তারপরেও কেন ফিরে এলে।" উত্তরে সেই যুবক বলল- "আমি ফিরে এসেছি, কেউ যাতে বলতে না পারে, এক মুসলমানের বিপদে আরেক মুসলামান সাহায্য করতে এগিয়ে এসে নিজেই বিপদে পড়ে গেছিলো।" . এবার হযরত উমর (রা) হযরত আবু যর গিফারী (রা) কে জিজ্ঞেস করলেন, "আপনি কেন না চেনা সত্যেও এমন জামিনদার হলেন।" উত্তরে হযরত আবু যর গিফারী (রা) বললেন, "পরবর্তিতে কেউ যেন বলতে না পারে, এক মুসলমান বিপদে পড়েছিলো, অথচ কেউ তাকে সাহায্য করতে আসেনি।" . এমন কথা শুনে, হঠাৎ বৃদ্ধের দুই সন্তানের মাঝে একজন বলে উঠল, "হে খলীফা আপনি তাকে মুক্ত করে দিন। আমরা তার উপর করা অভিযোগ তুলে নিলাম।" . হযরত উমর (রা) বললেন, কেন? তাদের মাঝে একজন বলে উঠলো, "কেউ যেন বলতে না পারে, এক মুসলমান অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল করে নিজেই স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার পরেও অন্য মুসলমান তাকে ক্ষমা করেনি।" [হায়াতুস সাহাবা-৮৪৪]
 সুরা মূলক এর ফজিলত

সুরা মূলক এর ফজিলত

❤❤সূরা মূলক-এর ফজিলত : ❤হযরত উসমান (রাঃ) যখন কবরের ধার দিয়া যাইতেন তখন কান্নায় উনার দাড়ি ও বুক ভাসিয়া যাইত। লোকে জিজ্ঞাসা করিত ।আপনি জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনাও এত বেশী কান্নাকাটি করেন না। এর কারণ কি ? তিনি বলেন, আমি হুজুর (সাঃ) এর নিকট শুনিয়াছি কবর আখেরাতের প্রথম মন্জিল। ❤যে ব্যক্তি এখানে নাজাত পাইল, তাহার জন্য সমস্ত মন্জিল আছান বা সহজ । আরো শুনিয়াছি কবর হইতে ভয়ংকর দৃশ্য আমি কোথাও দেখি নাই।যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মূলকের আমল করবে সে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবে। (তিরমিজি-২৮৯০, মুসতাদরাকে হাকেম) ❤হজরত আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিতআছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোরআন শরীফে ৩০ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে,যার তেলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করে না দেয়া পর্যন্ত তার জন্য সুপারিশ করতেই থাকবে। সূরাটি হলো-- তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মূলক। (আবু দাউদ-১৪০২, তিরমিজি-২৮৯১, ইবনে মাজাহ-৩৭৮৬, মুসনাদে আহমদ-২/২৯৯)। ❤অন্য এক হাদিসে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন," আমার মন চায় প্রত্যেক মুমিনের হৃদয়ে যেনো সূরা মূলক মুখস্ত থাকে। "[বায়হাকীর শুআবুল ইমান-২৫০৭]। ❤আরেকটি এক হাদিসে বর্ণিত আছে,যে এ সূরা তেলাওয়াতকারীর আমলনামায় অন্য সূরার তুলনায় ৭০ টি নেকী বেশি লিখা হবে এবং ৭০টি গোনাহ মুছে ফেলা হবে। (তিরমিজি-২৮৯২)। ❤আর যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মূলকের।আমল করবে সে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবে। (তিরমিজি-২৮৯০, মুসতাদরাকে হাকেম)। ❤হাদীসে আছে; রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো রাতে সুরা মূলক না পড়ে ঘুমাতেন না। (তিরমিজি-২৮৯২, হিসনে হাসিন)। ❤আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “কবরস্থিত ব্যক্তির নিকট পায়ের দিকে দিয়ে ফেরেশতারা শাস্তির জন্য আসতে চাইবে। তখন তার পদদ্বয় বলবে, আমার দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা সে সূরা ‘মুলক’ পাঠ করত।
আসুন আমরা আমাদের রবের দিকে ফিরে যাই

আসুন আমরা আমাদের রবের দিকে ফিরে যাই

এর থেকে বড়ো সত্য আর নেই। কত শত সেলিব্রিটি প্রতিনিয়ত আত্মহত্যা করছে জীবন নিয়ে হতাশ হয়ে।দুনিয়াতে সুখী হওয়ার মতো তাদের কী ছিল না? সবই ছিল, ছিল না কেবল আল্লাহ। মানুষের অন্তরে রয়েছে তার রবের চাহিদা। অনেকে সেই চাহিদা চেপে রাখার চেষ্টা করে, কেউ হত্যা করার চেষ্টা করে, কেউ চেষ্টা করে হাবিজাবি জিনিস দিয়ে সেই চাহিদাকে ভুলে থাকতে। কিন্তু আপনি তো তেমন নন।আপনি জানেন,আপনি চেনেন আপনার রব কে।তাহলে আর দেরি কেন? وَ اذْكُرُوا اللّٰهَ كَثِیْرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَۚ এবং আল্লাহ তায়ালাকে বেশ বেশী করে স্মরণ করতে থাকবে, আশা করা যায় তােমরা সাফল্য লাভ করতে পারবে।(আল-আনফাল:৪৫) আপনার জীবনটা এতটা অর্থহীন নয়।এই মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা মহাজ্ঞানী আল্লাহ নিশ্চয়ই এমন আনাড়ির মতো খেল - তামাশাময় কিছু করবেন না।আমরা মানবজাতি সৃষ্টির পূর্বেই আমাদের জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নির্ধারিত হয়েছে। সবাই আসুন আমরা আমাদের রবের দিকে ফিরে যায়। ✍️✍️✍️✍️عابيد الرحمان صادق
Islam

Islam

১০ জানুয়ারি ৬২৬ খ্রিস্টাব্দের আজকের এইদিনে হোসাইন ইবনে আলী রা. জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নবী হযরত মুহাম্মাদ সা. এর দৌহিত্র এবং আলী রা. ও ফাতিমা রা. এর দ্বিতীয় পুত্র। হাদিস থেকে জানা যায় হাসান রা. ও হোসাইন রা. হবেন জান্নাতে যুবকদের সর্দার। ইয়াজিদ ক্ষমতার মসনদে বসলে হোসাইন রা. মদিনা ত্যাগ করে মক্কায় অবস্থান শুরু করেন। এই সময় কুফার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের কাছ থেকে কুফায় যাওয়ার জন্য চিঠি আসতে লাগলো। তিনি অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য চাচাতো ভাই মুসলিম বিন আকীলকে কুফায় পাঠায়। মুসলিম বিন আকীল পরিস্থিতি ভালো জানালে হোসাইন রা. ইস্তিখারা করেন এবং অবশেষে কুফায় যাওয়ার সিধান্ত নেন। এই সংবাদ ইয়াজিদ এর কাছে পৌঁছালে তিনি বসরার গভর্নর উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে কুফায় যাওয়ার নির্দেশ দেন। জিয়াদ এসে কুফার মানুষকে ভয় দেখালে তারা মুসলিম বিন আকীলের সাথে গাদ্দারি করে। জিয়াদের সৈন্যরা মুসলিম বিন আকীলকে হত্যা করে ছাদ থেকে ফেলে দেয় এবং হোসাইন রা. এর পথ অবরোধ করে কারবালার প্রান্তরে ৬১ হিজরির ১০ মুহররম (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) হোসাইন রা. কে তার ৭২ জন সঙ্গী সহ নির্মম ভাবে শহীদ করেন।